করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি ও সচেতনতার গুরুত্ব
করোনা
ভাইরাস প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি
করা। যেহেতু ভাইরাসটি ছোঁয়াচে, তাই ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও সামাজিক আচরণে
পরিবর্তন এনে একে প্রতিহত করা সম্ভব।
ব্যক্তিগত
সুরক্ষার নিয়মাবলি:
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রথম এবং প্রধান পদক্ষেপ হলো নিয়মিত হাত ধোয়া। সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড হাত
ধোয়া হলে ভাইরাস অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া অ্যালকোহলভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করাও গুরুত্বপূর্ণ।
মাস্ক
ব্যবহার করাও অপরিহার্য। সংক্রমিত ব্যক্তি হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ায়, আর মাস্ক এই
ছড়ানো অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে ভিড় বা জনসমাগমস্থলে গেলে
অবশ্যই মাস্ক পরা উচিত।
সামাজিক
দূরত্ব:
একজন মানুষ থেকে অন্য মানুষের মধ্যে অন্তত এক মিটার (৩
ফুট) দূরত্ব বজায় রাখা করোনা প্রতিরোধে খুবই কার্যকর। দোকান, বাজার, গণপরিবহন, অফিস কিংবা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এই নিয়ম মেনে
চলা অত্যন্ত জরুরি।
বাড়িতে
থেকে সুরক্ষা:
করোনাকালে ‘ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন’—এই বার্তা ছিল
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অপ্রয়োজনে বাইরে যাওয়া বন্ধ রাখা, গণপরিবহন পরিহার করা এবং অফিসের কাজ বাসা থেকে করার সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। এতে সংক্রমণের হার অনেকটা কমে।
সচেতনতা
বৃদ্ধি:
শুধু ব্যক্তি নয়, সমাজের সবাইকে সচেতন করতে হবে। মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং সরকারি প্রচারাভিযান ছিল এই ক্ষেত্রে বড়
ভূমিকা পালনকারী। ভুল তথ্য বা গুজব থেকে
মানুষকে সচেতন করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ তথ্য প্রচার করে গেছে।
টিকাদান
কর্মসূচি:
করোনার বিরুদ্ধে টিকা ছিল এক বড় আশার
আলো। বাংলাদেশে প্রথম দিকে স্বাস্থ্যকর্মী, প্রবীণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ পেশার মানুষদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হয়। এরপর ধাপে ধাপে সাধারণ জনগণও টিকা পায়। ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিরা সংক্রমণ হলেও তুলনামূলকভাবে কম জটিলতায় ভুগেন।
মনের
যত্ন নেওয়া:
করোনা শুধু শারীরিক নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও বড় চাপ ফেলে।
দীর্ঘ সময় ঘরে থাকা, আত্মীয়স্বজন থেকে দূরে থাকা এবং সংক্রমণের ভয় মানুষকে হতাশ
করে তোলে। তাই মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতাও ছিল জরুরি। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে
ভার্চুয়াল যোগাযোগ, নিয়মিত ব্যায়াম, বই পড়া ইত্যাদি
চর্চা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা শিখেছি, সচেতনতা, স্বাস্থ্যবিধি এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টাই সবচেয়ে বড় অস্ত্র। ভবিষ্যতের
যেকোনো স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় আমাদের এই অভিজ্ঞতা কাজে
লাগাতে হবে। সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের সবার দায়িত্ব, নিজের পাশাপাশি অন্যকেও সুরক্ষিত রাখা।
No comments