করোনা ভাইরাস – একটি সাধারণ পরিচিতি
করোনা ভাইরাস (COVID-19) ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম সনাক্ত হয়। ভাইরাসটি শ্বাসনালীর মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করে এবং ফ্লু-এর মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ২০২০ সালের মার্চ মাসে এটিকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। করোনা ভাইরাস একটি নতুন ধরনের ভাইরাস যা পূর্বে মানুষের মধ্যে সনাক্ত হয়নি। এটি প্রধানত হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে সংক্রমিত ব্যক্তি উপসর্গহীন থাকলেও, অন্যদের মাঝে ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণ উপসর্গ হলো: জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা, ক্লান্তি এবং শ্বাসকষ্ট। কিছু ক্ষেত্রে, রোগটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে এবং নিউমোনিয়া, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। বয়স্ক ও পূর্বে অসুস্থ রোগীরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ব্যাপক চাপে পড়ে যায়। বিভিন্ন দেশ লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব গভীর। প্রথম করোনা রোগী ২০২০ সালের মার্চ মাসে সনাক্ত হয়। এরপর দেশজুড়ে বিভিন্ন পর্যায়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে। করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। যেমন: নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার, ভিড় এড়িয়ে চলা ইত্যাদি। পরবর্তীকালে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় এবং বহু মানুষ টিকা গ্রহণ করে। করোনা ভাইরাস আমাদের জীবনের অনেক কিছু পাল্টে দিয়েছে। আমাদের আচরণ, কাজের ধরন, শিক্ষা পদ্ধতি ও সামাজিক মেলামেশায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। অনলাইন শিক্ষা, ওয়ার্ক ফ্রম হোম এবং ডিজিটাল যোগাযোগের গুরুত্ব বেড়ে গেছে। অতএব, করোনা ভাইরাস কেবল একটি স্বাস্থ্য সংকট নয়; এটি একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জও বটে। এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ, সচেতন ও দায়িত্বশীল হওয়া জরুরি।
No comments